বর্তমান সময়ে মানুষের মুখে মুখে ভেসে বেড়ানো সবথেকে বহুল আলোচিত এবং আতংক সৃষ্টিকারী শব্দের নাম হল “করোনা ভাইরাস”। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান প্রদেশের একটা বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হয়। করোনা ভাইরাস মূলত Severe Actute Respiratory Syndrome (SARS) গোত্রেরই একটা ভাইরাস, তাই একে বলা হয় SARS-CoV-2।
সর্বপ্রথম SARS দেখা দিয়েছিল ২০০২ সালে, ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল ছিল বাদুরের শরীর, যা পরবর্তীতে মানুষের দেহে ছড়িয়ে যায়। তারপর দেখা দেয় Middle East Respiratory Syndrome (MARS) ২০১২ সালে, এটার উৎপত্তিও হয় বাদুর থেকেই। সবশেষে এলো ২০১৯ সালে SARS-CoV-2 (2019), যা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে গোটা দুনিয়াকেই।
SARS CoV-2 virus নিয়ে জানতে প্রথমেই আমরা জানি, Ro নিয়ে। Ro হলো একজন আক্রান্ত মানুষ থেকে একটা নির্দিষ্ট রোগ কতজন মানুষের মাঝে ছড়াতে পারে। Ro=1 মানে হলো একজন আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে সুস্থ একজনের মাঝে ছড়ায়। Ro=3 মানে হলো একজন আক্রান্ত ব্যাক্তির দেহ থেকে তিনজন সুস্থ ব্যাক্তির দেহে ছড়িয়ে যায় virus।
Calculation করে ধারণা করা হয়, SARS CoV-2 virus এর Ro (2-3) এর মাঝে রয়েছে। এই Ro মান যতদিন 1 থেকে বড় থাকবে, ততদিন virus এর transmission graph উর্ধ্বমুখী থাকবে। এই graph কে নিম্নমুখী করার মাধ্যমেই, অর্থাৎ Ro কে শূন্য করার মাধ্যমেই transmission ঠেকানো সম্ভব। Quarantine এ থাকা, হাত ধোয়া, নিয়মিত মাস্ক ব্যাবহার করা, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলাই পারে Ro এর মান কমিয়ে এনে graph কে নিম্নমুখী করতে।
SARS CoV-2 virus হলো এক ধরণের Enveloped Positive Sense Single Strand RNA Virus। এর capsule এর বাহিরে কিছু protein দিয়ে তৈরি Spike থাকে।
আক্রান্ত ব্যাক্তির হাঁচি, কাশি, থুতুর মাধ্যমে সুস্থ ব্যাক্তির শরীরে SARS CoV-2 virus প্রবেশ করে নাক বা মুখের মাধ্যমে। তারপর সেটা চলে যায় trachea তে। Virus এর load যদি বেশি হয়, তবে সেটা Upper Respiratory Tract কে ফেলে চলে যায় Lower Respiratory Tract এ। Virus এর load যদি কম হয়, সেটা Upper Respiratory Tract এই থেকে যায়।
ধরে নিলাম, virus এর load অনেক বেশি আক্রান্ত ব্যাক্তির শরীরে। ফলে, Lower Respiratory Tract এ virus প্রবেশ করলো, সোজা চলে গেলো trachea বেয়ে ফুসফুসে। ফুসফুসের ভেতরে মিলিয়ন মিলিয়ন Alveoli আছে। Alveoli তে দুই ধরণের কোষ থাকে; Type-1 এবং Type-2 Pneumocyte।
Type-1 কোষটি কাজ করে গ্যাসীয় আদান প্রদানে, অর্থাৎ O2 এর গ্রহন এবং CO2 এর নির্গমনে ভূমিকা পালন করে এই কোষটি। Type-2 কোষের কাজ হলো Surfactant তৈরি করা। এটি এমন এক chemical যা Alveoli গুলোর Surface Tension কমিয়ে গ্যাসীয় আদান-প্রদানের সময় চুপসে যেতে বাধা দেয়।
ফুসফুসে প্রবেশ করে SARS CoV-2 virus আক্রমণ করে বসে Type-2 Pneumocyte কে। এই কোষের ভেতরে একটা receptor আছে, Angiotensin Converting Enzyme-2 (ACE-2); যা virus এর Protein Spike গুলোর সাথে খাপে খাপ বসে যাবে। ফলে, virus এর capsule গলে গিয়ে ভেতরে থাকা Single Strand RNA প্রবেশ করবে সোজা Type-2 cell এর cytoplasm এ।
Single Strand RNA এখন চলে যাবে Type-2 cell এর Ribosome এর কাছে। Type-2 cell এর ribosome এর কাছে থাকা তাদের নিজস্ব RNA কে সরিয়ে দিয়ে সেখানে বসে যাবে SARS CoV-2 virus এর RNA। Ribosome কে কাজ করিয়ে translation এর মাধ্যমে সে তৈরি করবে অনেকগুলো Polyprotien।
Polyprotien এর খন্ডগুলো Proteolase enzyme এর মাধ্যমে ভেঙে গিয়ে তৈরি করবে SARS CoV-2 virus এর জন্য enzyme, প্রচুর Spike এবং capsule। এদিকে Single Strand RNA টি RNA Polymerase এর মাধ্যমে তার মতোই অনুরূপ অনেকগুলো Single Strand RNA কপি তৈরি করে ফেলবে।
এভাবেই, capsule, spike, enzyme, RNA মিলে পূর্বের একটি SARS CoV-2 virus এর RNA থেকে Type-2 কোষের ভেতরে তৈরি করে ফেলবে অসংখ্য SARS CoV-2 virus।
ফলাফল স্বরূপ, type-2 কোষগুলো নষ্ট হওয়া শুরু হবে। কোষগুলোর কাজ ছিলো Surfactant তৈরি করা, কিন্তু সেগুলো আর পর্যাপ্ত পরিমাণে Surfactant তৈরি করতে পারবেনা। এতে, Surface Tension বেড়ে যাবে, Alveolar Collapse করার সম্ভাবনা বাড়তে থাকবে।
Type-2 Pneumocyte গুলো নষ্ট হবার কারণে কোষগুলো থেকে কিছু Inflammatory Mediators বের হবে। সেই Mediators গুলো ডেকে নিয়ে আসবে Macrophage কে। Macrophage ফুসফুসের ভেতরে কিছু factor ছেড়ে দেবে।
যেমন- Interleukin-1 (IL-1) এবং Interleukin-6 (IL-6)। এই দুটো factor alveoli থেকে চলে আসবে Interstitial Space (ফাঁকা জায়গা) ভেদ করে Blood Vessel (রক্তনালী) এ। Factor গুলো blood vessel গুলোকে Dilate করবে, একে আমরা Vasodilation বলে থাকি।
Vasodilation হবার কারণে রক্তের গতিবেগ বাড়বে, বেশি বেশি রক্ত blood vessel দিয়ে যাবার সময় pressure এ Fluid Leakage হবে, যেগুলো blood vessel থেকে জমা হবে Interstitial Space এ। এতে ফাঁকা জায়গা কমে যাবে Alveoli গুলোর জন্য, বাতাস আদান-প্রদানে বাধা আসবে এবং Alveolar Collapse হতে পারে।
Interstitial Space থেকে fluid গুলো চলে যেতে পারে alveoli এর ভেতরে। এতে alveoli গুলো বাতাসের বদলে সব পানিতে ভর্তি হয়ে যাবে, Alveolar Edema দেখা দেবে।
Surfactant কমে যাওয়ায় এবং Alveolar Edema দেখা দেয়ায় alveoli গুলো তাদের কর্মক্ষমতা হারাবে এবং পর্যাপ্ত গ্যাসীয় আদান-প্রদান হবেনা। এতে, রক্তে oxygen এর ঘাটতি দেখা দিবে যাকে আমরা বলি Hypoxaemia। শরীরের oxygen এর ঘাটতি কে ঠিক করার জন্য রোগী তখন বেশি বেশি শ্বাস নেয় ও ত্যাগ করে। কিন্তু Alveolar Collapse এর কারণে Respiration চালনা করা কষ্টকর হয়ে পড়ে এবং রোগী শ্বাসকষ্টে ভোগে।
দেহের এই সামগ্রিক অবস্থায় আসে আরেক সৈনিক Neutrophil। সে blood vessel হয়ে চলে যাবে সরাসরি ফুসফুসে। Neutrophil alveolus এর কাছে এসে Protease ক্ষরণ করবে যেটা SARS CoV-2 virus কে আক্রমণ করে মেরে ফেলে। কিন্তু, SARS CoV-2 virus কে মারতে গিয়ে সে Type-1, 2 দুই ধরণের প্রয়োজনীয় কোষগুলোকেও মেরে ফেলে। ফলে, মৃত কোষ Type-1, 2 Pneumocyte, SARS CoV-2 virus এবং neutrophil একসাথে স্তুপ আকারে জমা হয় alveolus এর ভেতরেই, এই অবস্থাকে আমরা বলি Consolidation।
IL-1, IL-6 এখন blood এ ভেসে ভেসে চলে যাবে মস্তিষ্কের hypothalamus এর কাছে। Hypothalamus উত্তেজনা পেয়ে Prostaglanding-2 ক্ষরণ করবে। ফলে, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাবে এবং জ্বর আসবে। তাই, SARs CoV-2 virus এর একটা প্রধাণ লক্ষণ হিসেবে আমরা জ্বরকেই দেখতে পাই।
আগেই বলেছিলাম যে, SARS CoV-2 virus alveolus এ আক্রমণ করে Alveolar Collapse ঘটায়, ফলে আমাদের শরীরে oxygen এর ঘাটতি দেখা দেয়। Partial Pressure Of oxygen (PO2) কমে যাবার ফলে আমাদের Peripheral Chemoreceptor stimulation হয়।Peripheral Chemoreceptor আবার Sympathetic Nervous System কে stimulate করে। Sympathetic Nervous System stimulate হওয়ায় Heart Rate এবং Work Of Breathing বেড়ে যায়। Heart Rate অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার ফলে Heart Failure হবার সম্ভাবনা দেখা দেয় তখন।
Corona র প্রভাব শরীরে আরো খারাপ হতে থাকলে, Inflammation চলে আসবে Systemic Circulation এ।IL-1, IL-6 চলে আসবে systemic circulation এর blood vessel এ। Blood vessel গুলোকে factor গুলো আগের মতোই Vasodilation করবে। Vasodilation হবার কারনে Fluid Leakage বেড়ে যাবে, এতে Interstitial Space এ fluid জমা হতে শুরু করবে। প্রচুর fluid যদি blood vessel থেকে পালিয়ে ফাঁকা জায়গায় লুকানো শুরু করে, blood এর পরিমান (Volume) কমে যাবে। ফলে total peripheral resistance কমবে, Blood Pressure কমে যাবে; Patient Hypotensive হয়ে পড়বে।
Hypotensive হয়ে যাওয়ায় দেহের Organ গুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে আর রক্ত সরবরাহ পাবেনা। ফলে Multi Organ Failure হবার সম্ভাবনা দেখা দেবে।
যেমন- Kidney তে রক্তপ্রবাহ কমে যাবার কারণে nephron গুলো আগের মতো কাজ করতে পারবেনা। এতে, বিষাক্ত creatinine এবং nitrogen ঘটিত বর্জ্যগুলো kidney আর দেহের বাহিরে বের করে দিতে পারবে না। ফলে রক্তে Creatinine এবং Blood Urea Nitrogen এর পরিমাণ বেড়ে যাবে, Kidney Failure হবে।
Liver যখন রক্তপ্রবাহ পাবেনা, liver এর enzyme ALT, AST বেড়ে যাবে; Billirubin এর মাত্রাও বাড়বে। ফলে liver failure হবার সম্ভাবনাও দেখা দেবে।
Moinul Islam
Chattogram Ma-O-Shishu Hospital Medical College
Session: 2017-18
প্ল্যাটফর্ম একাডেমিক /সাঈদা আলম