নীরু: দিদি ওই ঔষধগুলো কিভাবে কাজ করে একটু বুঝিয়ে বলো না।
কাদম্বিনী: হ্যা বোঝাচ্ছি। Primary dysmenorrhea এর ক্ষেত্রে তেমন কোন ঔষধের প্রয়োজন নেই, তবে যদি ব্যথা বেশি হয় তাহলে Prostaglandin বিরোধী NSAIDs বেশীরভাগ রোগীর ব্যথা দূর করে। Neprophen, Ibuprofen, Ketoprofen, Mefenamic acid, Diclofenac ইত্যাদি এই শ্রেণীতে পড়ে। এমন ঔষধ সমূহ Prostaglandin উৎপাদনে বাধা দেওয়ার ফলে রোগীর ব্যথা নিয়ন্ত্রণে আসে। সাধারণত এইরকম যে কোন একধরনের ঔষধ তিন মাসিক চক্রের জন্য খেতে বলা হয়। যন্ত্রণা অনুভব হওয়ার সাথে সাথে ঔষধ গুলি আরম্ভ করে মাসিক চলতে থাকা দিনগুলিতে খেতে হয়। তবে এই ঔষধ খালি পেটে সেবনে বা অধিক সেবনে Acidity, Gastritis , Haematemesis ইত্যাদি হতে পারে। তবে Refoxicab জাতীয় ঔষধ পাকস্থলির প্রদাহ জনিত সমস্যার কম তৈরি করে।
নীরু: আর কি কি ঔষধ দেয়া হয় দিদি? আর যদি ওই ঔষধ কাজ না করে?
কাদম্বিনী: তোর আগ্রহ দেখে আমি হাপিয়ে যাচ্ছি নীরু। আচ্ছা শোন তাহলে, তিন মাসিক চক্রের পর ও যদি ব্যথা না কমে এবং হরমোনের ভারসাম্যজনিত কারণে মনে হয় তাহলে হরমোন বা Oral contraceptive pill (জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি) ট্যাবলেট সেবনের পরামর্শ দেয়া হয়। যা এক নাগাড়ে তিন মাসিক চক্র নিয়মিত সেবনে আর ব্যথা থাকার কথা নয়। ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টোরন মিলিত থাকার ফলে এটি সেবনে ডিম্বকোষ থেকে ডিম্ব প্রস্স্ফুটিত হয় না বিধায় যন্ত্রণা অনুভব করে না। আর এই প্রক্রিয়াতে ও ব্যথা না কমলে শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। ডাক্তারদের ভাষায় যদি বলি:
♦ Prostaglandin inhibitors যেগুলো সাধারণত non-steroidal inflammatory বা NSAIDs যেমন Aspirin বা Ibuprofen।
♦ Acetaminophen
♦ Oral contraceptive pill বা জন্ম নিয়ন্ত্রক বড়ি
♦ Progesterone বা হরমোনাল চিকিৎসা
♦ Heating pad across abdomen অর্থাৎ ব্যথা কমাতে গরম পানির সেক দেওয়া
♦ Diet changes অর্থাৎ খাবারে আমিষ বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা, চিনি বা চা-জাতীয় খাবার কম গ্রহণ করা।
♦ Vitamin supplementation
♦ Regular exercise বা ব্যায়াম করা
🔖 আর এই প্রক্রিয়াতে ব্যথা না কমলে শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে চিকিৎসা করা। যেমন:
♦ Endometrial ablation – যে প্রক্রিয়াতে জরায়ুর উপকোষ গুলো ধংস করা হয়
♦ Endometrial resection – যে প্রক্রিয়াতে জরায়ুর উপকোষ অপসারণ করা হয়
♦ Hysterectomy – এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জরায়ু অপসারণ করা হয়
নীরু: দিদি এইবার secondary dysmenorrhea নিয়ে কিছু বলো?
কাদম্বিনী: Secondary dysmenorrhea হল – এতে জরায়ু , ডিম্বাশয় বা প্রজনন তন্ত্রের যে কোন একটা অসুখের লক্ষণ এবং সেই অসুখ দূর হওয়া না পর্যন্ত সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া বা দীর্ঘ স্থায়ী মাসিক ব্যথা থাকবেই । তৃতীয় বিশ্বে ৭০% মহিলাদের সন্তান প্রসবের পর মেয়েদের প্রজননতন্ত্রে infection কারণকে বেশি দায়ী করা হয় । ডাক্তারী ভাষায় যদি বলি:
🔖 Definition of secondary dysmenorrhea:
“Secondary dysmenorrhea is normally considered to be menstruation associated pain occurring in the presence of pelvic pathology.”
কাদম্বিনী: Secondary dysmenorrhea এর প্রধান কারণ ( সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া সাধারণত ২৫থেকে ৪৫ বছরের মহিলাদের হতে দেখা যায়) –
♦ ১৯% মহিলাদের বেলায় Fibroid uterus, Endometriosis, Adenomyosis, Bacterial infection ইত্যাদি কারণে Secondary dysmenorrhea থাকতে দেখা যায় – তবে কোন Pathology এর কারণে হলে মাসিক জনিত ব্যথা ৭/৯ দিন পর্যন্ত চলতে পারে।
♦ এন্ডোমেট্রিওসিস – Endometriosis: ( এক্ষেত্রে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আবরণী টিস্যু জরায়ুসহ ফেলোপিয়ান টিউব, ডিম্বাশয় এবং পেল্ভিসে চলে আসে এবং ব্যথার সৃষ্টি করে।)
♦ ইউটেরিন ফাইব্রোয়েডস – Uterine fibroids: ( এই অবস্থায় জরায়ুর গাত্রে টিস্যু একত্রিত হয়ে পিন্ড সৃষ্টি করে। যার ফলে মাসিকের সময় ব্যথা হয়ে থাকে। তবে এই পিন্ড থেকে ক্যান্সার সৃষ্টি হয় না )
♦ এডেনোমায়োসিস – Adenomyosis: এই অবস্থায় জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আবরণী টিস্যু জরায়ুর পেশিবহুল দেয়ালে বৃদ্ধি পেতে থাকে )
♦ পেলভিক ইনফ্লামেটরী ডিজিজ – Pelvic inflammatory disease (P.I.D) : ( এটি মহিলাদের জননাঙ্গের একটি ইনফেকশন যা সাধারণত অনিরাপদ যৌন মিলনের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে )
♦ সারভিকাল স্টেনোসিস – Cervical stenosis : ( জরায়ুর মুখ ছোট হলে তা মাসিকের রক্তপ্রবাহে বাধা দেয় এবং জরায়ুতে চাপের সৃষ্টি করে ও ব্যথা হয় )
♦ ওভারিয়ান সিস্ট – Overian cyst : (ওভারিয়ান সিস্ট হলো ওভারিতে থাকা পানি বা তরলভর্তি থলি )
♦ পেলভিক টিউবারকুলোসিস – Pelvic tuberculosis: ভলভোডাইনিয়া, অস্বাভাবিক গর্ভাবস্থা অথবা গর্ভপাত ইত্যাদি কারণ সমূহ বেশী দায়ী। ডাক্তারী ভাষায় যদি বলি:
🔖Common causes of secondary dysmenorrhea:
♦ Cervical stenosis
♦ Chronic pelvic infection
♦ Pelvic endometriosis
♦ Haematemesis adhesions
♦ Adenomyosis
♦ Uterine fibroid
♦ Endometrial polyp
♦ IUCD in utero and pelvic congestion
♦ Obstruction due to Mullerian malformations are the other causes.
নীরু: কি কি সমস্যা হতে পারে secondary dysmenorrhea তে দিদি?
কাদম্বিনী: আনুষঙ্গিক অন্যান্য লক্ষণ বিদ্যমান থাকবে মাসিক অনিয়মিত হওয়া, মাসিক স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া , মাসিকের মধ্যে কয়েকবার রক্তস্রাব হওয়া, যোনিদ্বার দিয়ে স্রাব নির্গত হওয়া, যৌন ক্রিয়াতে কষ্ট অনুভব করা ইত্যাদি ।
🔖Clinical features:
⭕ The pain is dull, situated in the back and in front without any radiation. It usually appears 3–5 days prior to the period and relieves with the start of bleeding. The onset and duration of pain depend on the pathology producing the pain.
⭕There is no systemic discomfort unlike primary dysmenorrhea. The patients may have got some discomfort even in between periods.
⭕ There are symptoms of associated pelvic pathology.
নীরু: দিদি কি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে Secondary dysmenorrhea এর জন্য?
কাদম্বিনী: Secondary dysmenorrhea বলে সন্দেহ হলে অবশ্যই বেশ কয়েকটি পরীক্ষার আবশ্যকতা হতে পারে ৷ সেগুলি হলঃ
♦ Blood TC, DC, ESR, Hb and VDRL
♦ Vaginal swab examination
♦ Urine RME
♦ Ultrasound
♦ Endometria biopsy
♦ Laparoscopic examination
ইত্যাদি রোগের ধরনের উপর চিকিৎসকরা পরীক্ষার জন্য বলতে পারেন। তো এইবার বুঝলি তোর ব্যথার কারণ? আর এই জিনিস টাকে অবহেলা করে যাচ্ছিস।
নীরু: দিদি আসলেই অবহেলা করার মত অসুখ না। এখন থেকে নিয়মিত ঔষধ খাবো। আর স্কুলে যাদের এই সমস্যা ওদেরকেও বোঝাব ” মাসিক স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কিন্তু মাসিকের ব্যথা স্বাভাবিক না।”
কাদম্বিনী: এইতো সাব্বাস,এবার কিছু খেয়ে ঔষধ টা খেয়ে নে।
Reference: Dc Dutta’s Textbook of Gynaecology (7th edition )
Davidson’s Principles of Medicine (23rd edition)
নেহা খান
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ
সেশনঃ ২০১৭-২০১৮