Urine Sample Collection এর নানা প্রকারভেদ
প্রস্রাবে জ্বালা পোড়া করা, প্রস্রাব আটকে যাওয়া, প্রস্রাব দিয়ে রক্ত যাওয়া কিংবা Urinary system এর যেকোন সমস্যা নিয়েই আমরা যখন কোন ডাক্তারের কাছে যাই, প্রথমেই যে পরীক্ষাটা উনারা দিয়ে থাকেন সেটা হচ্ছে – Urine RME বা Routine Microscopic Examination।
আসুন জেনে নেই এই routine এবং সহজলভ্য পরীক্ষাটা আসলেই কতটা simple এবং সাথে সাথে এই পর্বের মাধ্যমে ধীরে ধীরে আমরা যেনে নিব এই পরীক্ষা থেকে আমরা কি কি ধারনা পেতে পারি।
প্রথমত আসেন আপনাকে যখন এই পরীক্ষাটা করতে বলা হল, তখন আপনাকে একটা টেস্টটিউব ধরিয়ে দিয়ে বলা হবে যে, যান প্রস্রাব ভরে নিয়ে আসেন। এখন সেটা কি সকালে দিবেন নাকি দুপুরে নাকি যেকোন একসময় দিলেই হবে!!! এই urine আপনি খাবার আগে দিবেন নাকি খাবার পরে দিবেন নাকি খাবারের সাথে এর কোন সম্পর্কই নেই- এরকম প্রশ্নতো আসতেই পারে!!!
তো এই স্যাম্পল সংগ্রহের timing এরও গুরুত্ব কিন্তু অনেক। দেখা গিয়েছে যে প্রস্রাবের পরীক্ষার রিপোর্ট ভুল আসার অন্যতম কারণ হচ্ছে স্যাম্পল সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় কোন ত্রুটি। এছাড়া স্যাম্পল নেয়ার সাথে সাথে পরীক্ষা করতে না পারা কিংবা স্যাম্পল সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা না মানা কিংবা স্যাম্পল সংগ্রহকারী এবং স্যাম্পল প্রস্তুতকারীর অজ্ঞতা – এগুলোই কিন্তু রিপোর্ট সঠিক না আসার মূল কারণ। তাই প্রথম পর্বে আমরা জানানোর চেষ্টা করব কখন এবং কিভাবে আপনি urine sample দিবেন।
যদি মনে করেন যে, urine স্যাম্পল থেকে আপনার প্রোটিনের গুণগত মান পরীক্ষা করা দরকার। যেমনঃ Orthostatic proteinuria অথবা Diabetes mellitus কিংবা sickle cell anemia তে যদি আমাদের urine এর specific gravity দেখার প্রয়োজন হয় তবে কিন্তু আমাদের নিতে হবে দিনের প্রথম যে urine টা আমরা বের করব সেই স্যাম্পল। আর সাধারণত স্যাম্পল দেয়ার আগে আমরা রোগীদের বলে দেই যে, আপনি খাবার ২-৩ ঘণ্টা পর এসে স্যাম্পল দিবেন এবং স্যাম্পল দেয়ার এক ঘণ্টার ভেতরেই পরীক্ষা করে ফেলা বাঞ্চনীয়। যদি ১ ঘণ্টার ভেতর স্যাম্পল পরীক্ষা করা সম্ভব না হয়, তবে স্যাম্পলটাকে কমপক্ষে ৪° সে তাপমাত্রায় সংরক্ষন করতে হবে।
খাবার ঠিক পরপরই যদি আমরা স্যাম্পল নেই অথবা যদি স্যাম্পল নেয়ার পর কয়েক ঘণ্টা পর আমরা পরীক্ষা করি, তবে এই urine ক্ষারীয় হয়ে যেতে পারে অথবা এখানে লোহিত রক্ত কনিকার ভাংগা cell বা বিভিন্ন ধরনের disintegrade casts এমনকি দ্রুতবর্ধনশীল bacteria ও আমরা পেতে পারি।
এভাবে নানা সময় নানাভাবে যে স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়, সেটাকে আমরা নানা নাম দেই- যখন তখন যে স্যাম্পল তাকে লেভেল করি random হিসেবে, দিনের শুরুর স্যাম্পল হল first morning sample। সবচেয়ে বেশি যা নেই তা হচ্ছে clean catch mid stream urine যা নিয়ে নিচে বিষদ আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও সারাদিন মানে ২৪ ঘণ্টা প্রস্রাব জমিয়ে total urine এই স্যাম্পলটাও লেভেল করে রাখি।
এর পরের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হচ্ছে আমরা কিভাবে urine sample collect করব।
ঠিকভাবে collection করা কিন্তু খুবই গুরুত্ব বহন করে এবং পুরুষ, মহিলা এবং শিশু এদের ক্ষেত্রে collection করার প্রক্রিয়া কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন। সাধারণত যৌনাংগ (per vaginal examination) কিংবা মলদ্বার (digial rectal examination) পরীক্ষা করার আগেই urine পরীক্ষার জন্য স্যাম্পল নিতে হবে নাহলে স্যাম্পল contamination হবার সম্ভাবনা থাকে এবং সব ধরণের স্যাম্পল সংগ্রহ করার আগেই সাবান পানি দিয়ে হাত ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। যেখানে প্রস্রাব নিবেন সেটা প্রস্রাব শুরুর আগে পর্যন্ত খোলা যাবে না এবং মাথায় রাখতে হবে এই container এর ভেতরের অংশ যেন কোনভাবেই হাত বা জামা কাপড় বা অন্য কিছুরই সংস্পর্শে না আসে।
পুরুষদের ক্ষেত্রে – স্যাম্পল সংগ্রহ করা একটু সহজ। তবে কয়েকটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। প্রথমেই একটা Sterile Testtube/ container আপনাকে দেয়া হবে স্যাম্পল সংগ্রহ করার জন্য। স্যাম্পল নেয়ার আগে যদি তার মুসলমানি (circumcision) করা না থাকে, তবে সেখানের চামড়াটা সরিয়ে নিতে হবে এবং ভালকরে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে। এই চামড়াটা কিন্তু অনেকসময় জীবাণুর আধার হয়ে থাকে তাই স্যাম্পল contamination হতে পারে। এর পর প্রস্রাব করা শুরু করবে।
এর পরের প্রশ্ন থাকে যে, পুরো সময়ের urine ই নিব নাকি অল্প একটু নিব? পুরো স্যাম্পল নিতে গেলে তো টেস্টটিউব উপচে পড়ে…!!
যাক সেটারও সমাধান আছে। প্রস্রাব শুরুর প্রথম ১৫-৩০ মিলি আমরা স্যাম্পল নিব না। ৩০ মিলি প্রস্রাব যাবার পর আমরা স্যাম্পল টেস্টটিউবে নেয়া শুরু করব যাকে আমরা বলি mid stream urine। এই mid stream urine এর ৫০-১০০ মিলি (টেস্টটিউবের সাইজ অনুযায়ী) আমরা সংগ্রহ করবে। স্যাম্পল নেয়ার সাথে সাথে টেস্টটিউবের মাথায় ঢাকনা লাগিয়ে দিতে হবে যাতে বাইরের কোন জীবাণু একে contaminate না করতে পারে।
এই midstream urine কেন নেয়া হয়?
এই urine এ সাধারণত মূত্রনালীর কোন প্রকার কোন secretion দিয়ে contaminated হবার সম্ভাবনা থাকে না।
মহিলাদের ক্ষেত্রে – এই স্যাম্পল সংগ্রহ করার প্রক্রিয়াটা এতো সহজ হয় না। সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে স্যাম্পলটা যদি Lithotomy position এ নেয়া হয়। এই পজিশনে রোগীকে শুইয়ে প্রথমেই যৌনাংগ এবং প্রস্রাবের রাস্তা জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার করা হয়। তারপর রোগীর কাছে একটা sterile container দেয়া হয় যেখানে সে প্রস্রাব করবে। তারপর আগের মতই প্রথম ১০-২০ মিলি প্রস্রাব করার পরের ৫০-১০০ মিলি প্রস্রাব ঐ container এ ধারণ করে সাথে সাথে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিবে। তবে যদি এভাবে স্যাম্পল সংগ্রহ করা না যায় তবে catheter করে স্যাম্পল নেয়া যেতে পারে।
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে – অনেক ঝক্কি সামলাতে হয়। এক্ষেত্রে আমরা অনেকসময় বাচ্চাদের প্রস্রাবের রাস্তা জীবাণুমুক্ত করে সেখানে একটা sterile প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে cover করে দেই তারপর সেই স্যাম্পল সংগ্রহ অরি। তবে এক্ষেত্রে সংগ্রহ করতে না পারলে মেয়েদের ক্ষেত্রে catheter করে স্যাম্পল নিয়ে নেই। আর ছেলে বাবুদের ক্ষেত্রে এমনকি মেয়ে বাবুদের ক্ষেত্রেও নাভির নিচে নামতে নামতে প্রথম যে হাড়টা পাই আমরা (pubic symphysis) তার থেকে ১-২ সেমি উপরে ১০ সিসি একটা সিরিঞ্জ এর সাথে ২২ গেজের needle ঢুকিয়ে প্রস্রাব সংগ্রহ করি। এক্ষেত্রে বাবুকে আগে পানি খাওয়াতে হবে এবং সেই জায়গাটুকু ভাল করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে এবং প্রয়োজনে surface or local anesthesia দিয়ে জায়গাটা অবশ করতে হবে যাতে ব্যথা কম পায়।
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে আরেকটা পদ্ধতি আছে যা Broomhall et al রিসার্চ করে বের করেছেন। উনারা বাচ্চাদেরকে খাওয়ানোর ১ ঘণ্টা পর থেকে তাদের pubic symphysis এর উপরে প্রতি সেকেন্ডে ১টা করে প্রায় ১ মিনিট ধরে tapping করে দেখেছেন যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাচ্চারা নিজে নিজেই প্রস্রাব করে ফেলে এবং সেই প্রস্রাব সংগ্রহ করা যেতে পারে।
শেষ করব এটা দিয়ে যে যদি রোগীর প্রস্রাবের রাস্তায় নল লাগানো থাকে তবে আমরা কিভাবে স্যাম্পল সংগ্রহ করব?
এটা সাধারণত দরকার হয় যারা অনেকদিন ধরে বিছানায় শুয়ে আছেন, যেমনঃ stroke অথবা spine এ আঘাত পেয়ে প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়া এমন রোগী। এক্ষেত্রে যে ব্যাগ গিয়ে ইউরিন জমা হয় সেখান থেকে কিন্তু স্যাম্পল নেয়া যাবে না কারণ সেটা contaminated হয়ে যায় ইতিমধ্যেই। এক্ষেত্রে catheter এর যে collection port থাকে তার নিচে catheter clamp করা হয় এবং একটি sterile needle এর মাধ্যমে urine সংগ্রহ করা হয়।
এভাবে স্যাম্পল করা urine খুব যত্ন সহকারে এবং সতর্কতার সাথে যেকোন ধরণের contamination avoid করে পাঠাতে হবে। যে container এ করে পাঠানো হবে তাতে যেন কোন ছিদ্র না থাকে। সঠিকভাবে লেভেলিং করে পাঠাতে হবে সঠিক তথ্য এবং সঠিক requisition সহকারে। কক্ষ তাপমাত্রায় খুব তাড়াতাড়ি জীবাণু grow করে তাই স্যাম্পল কালেকশনের ১ ঘণ্টার ভেতরেই পরীক্ষা করতে হবে অথবা freezing করতে হবে নাহলে false positive culture দিতে পারে।
যদি কারো মূত্রনালী অন্ত্রের সাথে সংযোগ করে রাখা হয় যেমনঃ ileal or colonic conduit এমন রোগীদের ক্ষেত্রে আমরা stoma এবং তার আশপাশ খুব ভাল করে পরিস্কার করব। তারপর একটা catheter নিব। তার drainage port রাখব collection container এ। catheter ভাল করে লুব্রিকেট করে তারপর stomar র ভেতর ঢুকিয়ে দিব। তারপর আগের নিয়মেই প্রস্রাব সংগ্রহ করব।
আজকে এটুকুই পরের পর্বে আমরা Urine থেকে আমরা কি কি পরীক্ষা করে পাই সেই আলোচনা শুরু করব।
সম্পাদনায় – ডা. অনুজ কান্তি দাশ
সহকারী রেজিস্ট্রার (সার্জারি)
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট।
References: McAninch JW, Lue TF. Smith & Tanagho’s General Urology. 18th edition. NewYork: McGraw-Hill; 2013. Chapter 5, Urologic Laboratory Examination; p48-49