মানুষ মুড়ির মত যা খায় তা মুড়ি চিড়া কিছু না, সে হল গ্যাসের ওষুধ। আর অনেক ডাক্তারও মুড়ির মত যে ওষুধ প্রেসক্রাইব করে তাও গ্যাসের ওষুধ। আজ সেই মুড়ির সাথে পিয়াজ মরিচ মাখিয়ে ঝাল মুড়ি বানাবো!
Peptic Ulcer Disease (PUD)
Peptic মানে এমন একটা জায়গা যা এসিডের সংস্পর্শে আসে। সেই হিসেবে stomach, lower end of esophagus, part of duodenum, gastro jejunostomy site, যার ফলে stomach থেকে এসিড মিশ্রিত খাবার সরাসরি jejunum এ আসে, part of ileum যদি সেখানে Meckel’s Diverticulum থাকে – এই সব জায়গাগুলোকে Peptic বলে। এসব জায়গায় ulcer হলে তবেই তাকে বলে peptic ulcer disease।
Peptic Ulcer Disease হলে endoscopy ছাড়া দেখার উপায় নেই। গলা থেকে নল ঢুকিয়ে দেখা হয়। তবে symptoms পেলেই নল ঢুকানো যাবে না। যদিও আজকাল অনেকে ঢুকায়, লাভ আছে! করতে হবে বুঝে শুনে, আর নিয়ম মেনে। আর একটা জিনিস আছে capsule endoscopy। ক্যাপসুলের মত ক্যামেরা লাগানো endoscopy pill খেয়ে ফেলতে হয়, এরপর সাবমেরিনের মত GIT সমুদ্রে ছুটতে থাকে আর ছবি পাঠায় বাইরে থাকা রিসিভারে। সমুদ্র পাড়ি দিয়ে একসময় পায়খানার সাথে বের হয়ে যায়।
সেই ছবিতে কী দেখি?
দেখি ক্ষত কেমন, কতটা গভীর। শুধু যদি উপরের mucosa ও submucosa জুড়ে থাকে, তবে gastric erosion। আর যদি muscularis mucosa পর্যন্ত চলে যায়, তবে gastric ulcer। এরপর বাকি থাকে serosa, সেটা অতিক্রম করতে পারলেই gastric ulcer perforation। ছিদ্র হয়ে gut content এসে পড়বে abdominal cavity তে। অবস্থা ভয়াবহ! তবে এই ভয়াবহ অবস্থা আমরা প্রায়শই দেখি না। তার কারণ হল – Ulcer হল, তারপর মোটামুটি control, ততদিনে fibrosis হয়ে ulcer heal হল, আবার সেখানে ulcer, আবার fibrosis। তাই chronic ulcer এ perforation এর ঝুঁকি কম, কিন্তু অন্য ঝুঁকি বেশি। আর তা হল এই রকম বারবার ulcer to fibrosis হতে হতে একসময় gastric metaplasia dysplasia হয়ে gastric cancer develop করে৷
অন্যদিকে acute এর ক্ষেত্রে হঠাৎ করে অনেক বেশি acid secretion হয়ে পাকস্থলি ছিদ্র হয়ে যেতে পারে। Acute condition হয় কিছু খারাপ অভ্যাসের জন্য। যার মধ্যে একটি হল মুড়ি চানাচুরের মত হিসেব ছাড়াই ব্যথার ওষুধ খাওয়া। বিশেষকরে NSAID, যারা cox1 ও cox2 দুটোকে inhibit করে। Cox1 inhibit করার ফলে gastroprotective substance কম তৈরি হয়, ফলে হতে পারে perforation। এক্ষেত্রে selective cox 2 inhibitor কিছুটা ভাল।
Ulcer perforation এর আগে মহা বিপদ সংকেত হিসেবে ulcer bleeding হতেও পারে, নাও পারে। তখন blood উপর দিয়ে ও নিচ দিয়ে বের হবে, হবে hematemesis ও melaena হবে। এসিডের সাথে মাখামাখি হয়ে blood এর রং কিন্তু আর লাল থাকবে না, হবে যায় চকলেট বাদামী (altered blood)। আর যদি বমির সাথে তাজা টকটকে লাল রক্ত বের হয় তবে সেটা পাকস্থলীর উপরের অংশ যেমন oesophagus, pharynx বা oral cavity থেকে আসছে বলে ধরে নিতে হবে৷ তবে profuse ulcer bleeding লাল রক্ত আসতে পারে, পরিমাণে বেশি থাকবে।
রোগী যা বলেঃ
• পেটে বিষ করে, ভুডুর ভাডুর করে, গলা জ্বলে, বমি বমি লাগে। প্রথমত আমরা এটাকে বলে Dyspepsia বলি।
• কারো কারো থাকে ব্যথা। খাওয়ার পরপরই ব্যথা হলে Gastric Ulcer এর সম্ভাবনা বেশি, কারণ খাওয়ার পর gastric acid secretion বাড়ে। আর খালি পেটে ব্যথা বেশি হলে Duodenal ulcer, কারণ duodenum এ যতক্ষণে খাবার পৌছায় ততক্ষণে stomach খালি।
• কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসিড পিছনের গেট (lower oesophageal sphincter) খোলা পেয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করে, যার ফলে এসিড stomach ছেড়ে oesophagus এ আসে। এতে রোগী বলে গলা বুক জ্বলে (Heartburn), বিশেষ করে রাতের বেলা ঘুমের মধ্যে। যাকে আমরা বলি Gastroesophageal Reflux Disease (GERD)।
রাতের বেলা ঘুমের মধ্যে কেন?
এই কারণ দুইটা।
• এক, দাঁড়ানো থেকে শোয়া অবস্থায় stomach to oesophagus যাওয়া সহজ।
• দুই, ঘুমানোর সময় parasympathetic activity বাড়ে, যা oesophageal sphincter কে relax করে।
Symptoms থেকে আমরা মোটামুটি একটা ধারণা পেতে পারি এটা হতে পারে dyspepsia বা GERD বা peptic ulcer disease।
এরপর রোগীর কষ্ট কমাতে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করি, সাথে প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা।
Treatment বলতে acid secretion কমাতে anti ulcerant, বা acid কে neutralize করতে antacid।
শুধু ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দিলেই কি হবে?
না, এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে। তা না হলে কিছুদিন পর যা লাউ তাই কদু হবে, আর রোগীও বছরের পর বছরের নামে বেনামের গ্যাসের ওষুধ কিনে কিনে খাবে।
কারণ কিন্তু অনেক।
• রোগীর বদ অভ্যাস। আমাদের শরীরে এসিড প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে নির্দিষ্ট অবস্থায় নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণে। এই নির্দিষ্ট কখনও অনির্দিষ্ট হলেই যত যা সমস্যা। সকালে খেলাম না, কিন্তু ঠিকই ওই সময়ে খাবার পরিপাকের জন্য এসিড তৈরি হল। বেচারা এসিড খাবার না পেয়ে নিজের পাকস্থলীকেই পরিপাক করা শুরু করবে। তাই সময়মত খাওয়া। ঝালেই ঝাদু, তেলেই মজা। তেল ঝাল না হলে চলেই না। কিন্তু এসব খাবারই প্রচুর acid secretion করে। তাই এগুলো বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার সময়মত খাবে।
• ধূমপান, এলকোহল। ধূমপানে বিষপান, সাথে ফ্রি ফ্রি acid পান।
• অতিরিক্ত চিন্তা অবসাদ।
• NSAID তো আছেই, সাথে steroid, iron, digoxin, aspirin, potassium supplement, কিছু antibiotic ও আরো কিছু ওষুধ।
• Electrolyte imbalance যেমন hypercalcemia।
• Zollinger-Ellison Syndrome যেটা pancreas এর একটা gastrin secreting tumor। আর আমরা তো জানিই gastrin বেশি বেশি acid secretion করে।
• পাশাপাশি আরো কিছু রোগ, যেমন pancreatic disease। কারণ বেশিরভাগ pancreatic secretion acid secretion করে। সাথে liver disease, colonic disease, renal disease, anaemia ইত্যাদিও acid secretion ও বাড়াতে পারে।
• সবশেষে Peptic ulcer disease শুনলেই মাথার মধ্যে যে microscopic জন্তুর চেহারাটা ভেসে ওঠে তা হল Helicobacter Pylori। যেটি চলাচলে সক্ষম একটি gram negative bacteria, বসবাস করে gut এর mucosa layer এ। সেখানে বসে inflammation করে gastritis সৃষ্টি করে, acid secretion বাড়ায়, ulcer তৈরি করে। ধারণা করা হয় 90% Gastric ulcer ও 70% Duodenal ulcer এর জন্য এই pylori দায়ী।
এক গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিয়ে চিন্তা ভাবনার শেষ নাই। এতকিছু চিন্তার প্রাধান্য বুঝে রোগীর কিছু পরীক্ষা করতে হবে।
Investigation:
• প্রধাণত Endoscopy। রোগীর বয়স ৫৫ হলে উপরের symptoms পেলে এটা must। আর বয়স এর কম হলে প্রয়োজন বুঝে। Endoscopy তে ulcer erosion যেমন সরাসরি দেখা যায়, তেমনি ulcer থেকে cancer হলে তা নিশ্চিত করতে biopsy sample ও collect করা যায়৷ আবার ulcer থেকে bleeding হলে তাও বন্ধ করা যায়৷ একেই বলে three in one!
• Helicobacter Pylori সন্দেহ দূর করতে urea breath test। রোগীকে urea মাখানো খাবার খাইয়ে দিলে, Helicobacter Pylori কতৃক প্রস্তুতকৃত urease enzyme তাকে ভেঙে NH3 গ্যাস বানাবে, ফলে নিশ্বাসে তার গন্ধ পাওয়া যাবে।
• আরো কিছু পরীক্ষা করা যায় অন্যান্য system এর disease suspect করে।
তা যাই হোক, আমরা বেশিরভাগ সময় clinical diagnosis করি। রোগীকে ওষুধ দেই। রোগী খেয়ে ভাল হয়, এরপর নিজেরাই ফার্মেসি থেকে ইচ্ছেমত কিনে খায়, বছরের পর বছর ধরে খায়।
Treatment:
• Acid secretion কমানোর চিকিৎসা আমরা সবাই জানি। H2 blocker, proton pump inhibitor বা proton pump inhibitor গুলো দিনে ১ বার ব্যবহারের কথা থাকলেও আমরা রোগীর response বিবেচনায় প্রয়োজনে দুইবার দিই।
• Gastroesophageal Reflux Disease (GERD) কমাতে domperidone বা metoclopramide দেই PPI এর সাথে। পিছনের গেট দিয়ে বের যাতে না হতে পারে তাই একটা অপারেশনও মাঝেমাঝে করি, gastric fundoplication।
• Dyspepsia এর পেটের ভুডুর ভাডুর কমাতে PPI সাথে immediate আরাম দিতে antacid জাতীয় লিকুইড দিই।
Helicobacter Pylori থাকলে যত যাই PPI দিই না কেন, একে eradicate না করতে পারলে লাভ নাই৷ যেহেতু সে একটা bacteria তাই তাকে কিল করতে antibiotic ই দিতে হবে। Amoxicillin, Metronidazole, Clarithromycin এই তিনটার যে কোন দুইটা ৭ দিন। প্রয়োজনে ১০-১৪ দিন। এই তিনটার মধ্যে Metronidazole resistance বেশি হয়, তাই Amoxicillin ও Clarithromycin combination বেশি ব্যবহৃত হয়, সাথে PPI তো থাকবেই। তিনটাকে একসাথে তাই Triple therapy ও বলা হয়। এতেও অনেক সময় কাজ হয় না, তখন সাথে আর একটা ওষুধ এড করে Quadraple therapy ব্যবহার করা হয়। OBMT – Omeprazole, Bismuth subcitrate, Metronidazole, Tetracycline। এতেও কাজ না হলে Omeprazole, Levofloxacin, Clarithromycin এই তিনটা দেওয়া হয়। তবে GERD থাকলে helicobacter Pylori eradicate এ একটু সাবধান! কারণ এরা stomach এর ক্ষতি করলেও oesophageal mucosa তে protective ভূমিকা পালন করে।
তো এই যে মুড়ি দিয়ে শুরু করেছিলাম, সেই মুড়ির মত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেলে কী কী অসুবিধা হতে পারে?
• প্রথম কথা বেশি দিন খাওয়া ঠিক না। একটানা বেশি হলে ২ মাস, এরপর খুব বেশি প্রয়োজন হলে।
• এরা acid secretion কমায় ভাল কথা, কিন্তু acid কিন্তু খাবারের জীবাণু ধ্বংস করে। তাই দীর্ঘদিন গ্যাসের ওষুধ খেলে পেটে আনুবীক্ষণিক পোকামাকড়েরা ঘরবসতি গড়ে তুলবে। এরে ডায়রিয়া হবে, gastroenteritis হবে।
• HCl ferric ফর্মের iron কে ferrous এ convert করে absorption এ সাহায্য করে। তাই এসিড না থাকলে iron কম absob হয়ে iron deficiency anaemia হতে পারে।
• দীর্ঘদিন ধরে খেলে renal disease, osteoporosis হতে পারে।
• PPI gut motolity বাড়ায়, ডায়রিয়াতে তাই এভয়েড করাই ভাল। তখন বিকল্প হিসেবে H2 blocker।
Prescribe করার সময় রোগীকে এসব অশনী সংকেতগুলো জানিয়ে দেওয়া ভাল।
Pregnancy তে কোনটা দেওয়া যায় ইহা নিয়ে বিশাল মতভেদ আছে। তবে আমি যা জানি সেখানে সব PPI ই safe, তবে omeprazole ছাড়া বাকিগুলোই বেশি safe। কেউ কেউ বলে omeprazole ই বেশি safe!
ওহে রোগীকুল,
ইচ্ছেমত ওষুধ খেয়ে করবেন না কোন ভুল!
নিয়ম মেনে চলুন,
আর সমস্যা হলে কাছের ডাক্তারকে বলুন।
ডা. কাওসার উদ্দীন
ঢামেক, কে-৬৫
Pingback: NSAIDs In Acute Epigastric Pain: Should Be Used or Not? ।। হাবিজাবি ২৩ – Platform | CME