Blog

MEDICAL COUNSELLING || A Step to Establish Rapport with Patients

Counselling Treatment বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ডাক্তার ও রোগীর মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক (Doctors Patients Relationship) গড়ে তোলার জন্য Counselling খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

বাংলাদেশের জনসংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে hospital এবং chamber- এ রোগীর যে চাপ এবং ভিড় থাকে সেই ক্ষেত্রে রোগীর চিকিৎসা প্রদানের পর Counselling এর জন্য সময় বের করা একটু দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তারপরও যদি আমরা চেষ্টা করে পাঁচটা মিনিট সময় বের করে রোগী এবং রোগীর লোকজনকে Counselling করতে পারি তাহলে তাদের মানসিক দুশ্চিন্তা অনেকাংশে লাঘব করা সম্ভব।

রোগীর লোকজনের পক্ষে রোগীর রোগ এর গভীরতা নিরূপণ করা খুব একটা সম্ভব হয় না। তারা রোগীর বাহ্যিক দিক বিবেচনা করে মনে করে যে রোগীর রোগ হয়তো এত বেশি Serious না অথবা রোগীর রোগ যা আছে তা খুব একটা খারাপ না। অথচ দেখা যাবে যে রোগী হয়তো প্রাণঘাতী কোন রোগ বহন করে বেড়াচ্ছে অথবা এমন একটি Emergency Crisis নিয়ে hospital- এ আসতেছে যার কারণে হয়তো তার জীবন শঙ্কার মুখে যা হয়তো ডাক্তার ব্যতীত অন্য কারো পক্ষে নিরূপণ করা সম্ভব না। ডাক্তার হয়তো রোগ নিরূপণ করে Already যথাযথ চিকিৎসা শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু যদি এইটা রোগীর আত্মীয় স্বজনের সাথে যথাযথভাবে communicate না করা হয় বা বর্ণনা না করা হয়, পরবর্তীতে রোগীর জীবন বিপন্ন হলে হয়তো একটা hospital- এ crisis create করবে অথবা অরাজকতা পরিবেশ তৈরি করবে। যা আমরা প্রতিনিয়তই দেখতে পাই। রোগীর লোকজন তখন দাবি করবে যে আমরা রোগীকে সুস্থ অবস্থায় নিয়ে আসলাম, তাহলে হঠাৎ করে এমন কি হয়ে গেল যে রোগী মারা গেল। যার ফলশ্রুতিতে হয়তো পরবর্তীতে দেখা যায় যে হাতাহাতি, মারামারি ভাঙচুর ইত্যাদি শুরু হয়ে যায়। তাই যথাযথ Counselling এর গুরুত্ব অপরিসীম। এটাকে রোগীর চিকিৎসার একটি অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। Physical Treatment- এর সাথে Mental Treatment ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িত। রোগীর রোগ সম্বন্ধে জানা রোগী এবং রোগীর আত্মীয় স্বজনের একটি অধিকার। যদি এটা কোন confidential রোগ হয়ে থাকে তাহলে রোগীর ইচ্ছা অনুযায়ী এ রোগটা সম্পর্কে রোগী ব্যতীত অন্য কাউকে জানানো যাবে না।

আমাদের প্রচলিত কিছু Counselling পদ্ধতিঃ

★ এই যে আপনার রোগীর অবস্থা ভালো না। বাসার সবাইকে জানিয়ে দিন।

★ আপনার রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা নাই। আপনারা মানসিকভাবে তৈরি থাকুন।

★ রোগীর অবস্থা যদি 99 % খারাপ এবং 1 % বাঁচার সম্ভাবনা থাকে— আল্লাহ আল্লাহ করেন। আল্লাহ যদি চায় তাহলে রোগী ভালো হবে।

★ আগে তো বলেছিলাম রোগীর অবস্থা খারাপ। এখন আবার ঝামেলা করতেছেন কেন?

কিছু ভুল কাউন্সেলিংঃ

★ রোগীর প্রকৃত রোগ গোপন করা।

★ রোগের গভীরতা সম্বন্ধে রোগী এবং রোগীর লোকজনকে না বলা।

★ রোগীর রোগ নিরাময় যোগ্য নাকি নিরাময় যোগ্য নয় সেই সম্বন্ধে পর্যাপ্ত তথ্য প্রদান না করা।

★ মিথ্যা আশ্বাস দেয়া যে রোগী ভালো হয়ে যাবে।

★ রোগীর কি কি Treatment চলতেছে কি কি Medicine দেয়া হচ্ছে এগুলো সম্বন্ধে যথাযথভাবে না বলা।

★ রোগীর চিকিৎসা পদ্ধতি এবং চিকিৎসা খরচ সম্বন্ধে অপর্যাপ্ত তথ্য প্রদান করা।

★ রোগীকে অন্যত্র refer করার পূর্বে যথাযথভাবে রোগীর রোগ সম্বন্ধে রোগীর লোককে তথ্য না প্রদান করা এবং পরবর্তী করণীয় সম্বন্ধে যথাযথভাবে না বলা।

★ রোগী অথবা রোগীর লোকজনকে কোন কথা বলার সুযোগ না দেয়া।

★ রোগীর লোকজন কোন প্রশ্ন করলে তার উত্তর না দেয়া।

★ রোগীর লোকজনের অভিযোগ অথবা রোগীর রোগ সম্পর্কিত দুঃখ- কষ্ট ঠিকভাবে না শোনা।

★ রোগীর লোককে যথাযথভাবে রোগীর রোগ সম্পর্কে না জানিয়ে রোগীকে ICU তে স্থানান্তর করা।

★ রোগীর লোকের অনুমতি ব্যতীত Life Support খুলে দেওয়া।

★ একটি Brain death রোগী সম্পর্কে যথাযথ তথ্য না প্রদান করে এবং রোগীর লোকজনের আর্থিক সক্ষমতা সম্পর্কে না জেনে তাকে ICU- তে রাখা।

★ Operation- এর পূর্বে Operation সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদান না করে সম্মতি নেয়া। Operation- এর জটিলতা, জ্ঞান ফেরা, না ফেরা, Operation- এর outcome এগুলো সম্পর্কে অপর্যাপ্ত ধারণা প্রদান করা।

BASIC STEPS OF COUNCILLING:

Fig : Basic steps of counselling.

Counselling করার পূর্বে আপনি প্রথমে রোগীর রোগ সম্পর্কে details জেনে নিন। রোগীর Investigation Report, Treatment, Medicine সবকিছু জেনে তারপরে Counselling- এর প্রস্তুতি নিন। প্রয়োজনবোধে রোগীর Investigation Report- গুলো সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারেন।

১. রোগী অথবা রোগীর লোককে আপনার পরিচয় প্রদান করেন। বলেন যে আপনি তাদের রোগীর চিকিৎসক এবং তাদের সাথে সাক্ষাৎকারের উদ্দেশ্য বলেন।

২. আপনি যাকে রোগীর রোগ সম্পর্কে Counselling করবেন তার পরিচয়টা জানার চেষ্টা করেন এবং জানার চেষ্টা করেন রোগীর সাথে তার সম্পর্ক কি। সব সময় চেষ্টা করবেন first- degree relatives দের কে Counselling- এ রাখার জন্য।

৩. রোগী অথবা রোগীর লোকজন Counselling এর সময় সাথে আর কাউকে রাখতে চায় কিনা তা জিজ্ঞেস করতে হবে। যদি রাখতে চায় তাহলে সাথে রাখতে দিতে হবে।

৪. Counselling সবসময় একটা Isolated room- এ করার চেষ্টা করবেন। খেয়াল রাখবেন যে Counselling এর সময় যেন আশেপাশের লোকজনের চিৎকার, চেঁচামেচি না হয় সেদিকে। Privacy কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এমন কোন স্থান নির্বাচন করা যাবে না যেখানে কথা বলতে ইতস্ততো বোধ করে।

৫. রোগী অথবা রোগীর লোকজনকে সবসময় বসতে বলবেন। কখনোই দাড়ানো অবস্থায় Counselling করবেন না। কারণ রোগীর লোকজন অনেক সময় রোগীর খারাপ সংবাদ সহজ ভাবে নিতে পারেনা। অনেক সময় কেউ কেউ মাথা ঘুরে পড়ে যায়।

৬. রোগী অথবা রোগীর লোকজনের সাথে চোখে চোখ রেখে কথা বলবেন। একে বলে Eye to Eye Contact। এজন্য দুজনের বসার উচ্চতা সমান হতে হবে।

৭. Counselling এর জন্য যে বড় গুনটি অাপনার প্রয়োজন তা হলো ভালো শ্রোতা হওয়া, Be a good listeners। ধৈর্য্যসহকারে রোগীর কথাগুলো শোনার চেষ্টা করুন এবং রোগীর কথা বলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত শুনতে থাকবেন। রোগীকে মাঝপথে কথা বলা থামিয়ে দিবেন না। ডাক্তারদের বিরুদ্ধে রোগীদের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হচ্ছে ডাক্তাররা নাকি রোগীর কথা শুনতে চায় না অথবা সবকিছু বলতে দিতে দেয় না। আমরা সাধারণত যা করি রোগীকে কথা বলার মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে বলি যে, ” আপনি থামেন আগে আমার কথা শোনেন ” – এধরণের attitude দেখানো যাবে না।

৮. রোগী অথবা রোগীর লোককে জিজ্ঞেস করেন যে তারা রোগীর রোগ সম্পর্কে কী জানেন এবং এই রোগ সম্পর্কে তাদের কি ধারণা। এটা আপনাকে রোগীর লোকদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়তা করবে এবং আপনি সহজেই রোগীর লোকদের রোগ সম্পর্কে Clinical knowledge কি তা সম্পর্কে অবহিত হতে পারবেন। যা আপনাকে পরবর্তীতে Counselling করতে সহায়তা করবে।

৯. সততার সাথে রোগীর সম্পর্কে সঠিক তথ্য এবং ধারণা প্রদান করবেন। রোগের outcome টা যথাযথভাবে বুঝিয়ে দিবেন।

১০. সহজ-সরল এবং প্রাঞ্জল ভাষায় রোগীর রোগ সম্পর্কে রোগীর লোকদেরকে বিবরণ দিবেন যাতে লোকজন খুব সহজেই বুঝতে পারে। দরকার হলে তাদের আঞ্চলিক ভাষায় বুঝিয়ে বলুন।

১১. জিজ্ঞেস করুন রোগীর লোকজন রোগীর রোগের বর্তমান অবস্থা সম্বন্ধে কতটুকু জানেন। তারা যতটুকু জানেন তার পর থেকে আপনি তাদেরকে রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দিন।

কখনোই তারা যা জানেন সেটা সম্পর্কে negative মন্তব্য করবেন না। বরং বলবেন আপনারা যা জানেন তা ঠিক আছে তবে আমি এর সাথে আরও কিছু তথ্য যুক্ত করতে চাই এবং তারপর আপনি বাকিটুক যথাযথভাবে বুঝিয়ে দিন।

রোগীর রোগ এর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত বলুন। এ রোগের কি কি complication হতে পারে সেটাও বলুন। এ রোগের চিকিৎসার outcome কি সেটাও বলবেন এবং কি কি complication হতে পারে সবকিছু রোগীর লোকদেরকে জানাবেন।

এই রোগের আর কি কি চিকিৎসা পদ্ধতি আছে এবং সবচেয়ে খারাপ outcome কি কি হতে পারে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন।

রোগীর চিকিৎসা ক্ষেত্রে কেমন ব্যয় হতে পারে সেটা সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদান করতে হবে।

রোগীর লোকজন কি বুঝাতে চেষ্টা করছেন সেটা মনোযোগ সহকারে শুনুন।

রোগীর লোককে কোন দুঃসংবাদ দেয়ার পূর্বে তাকে পূর্ব প্রস্তুতিমূলক কিছু বাক্য নির্বাচন বা ইঙ্গিত প্রদান করেন, যে আপনি তাকে একটি খারাপ সংবাদ দিতে যাচ্ছেন। একে বলা হয় Pre- Shock। এটা পরবর্তীতে রোগী অথবা রোগীর লোককে দুঃসংবাদটা সহজভাবে মেনে নিতে সহায়তা করবে। যেমন- ধরুন আপনি প্রথমে বলতে পারেন যে, “রোগীর report রোগের ধরণ দেখে আমার খুব একটা ভালো মনে হচ্ছে না। আমার মনে হচ্ছে রোগীর জন্য সামনে খুব খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে।” এতে করে রোগীর লোকজন নড়ে চড়ে বসবেন এবং খারাপ কিছু শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করবে।

১২. রোগীর লোকজনকে প্রশ্ন করার সুযোগ দিন এবং তারা যে প্রশ্ন করে সেটার সঠিক উত্তর প্রদান করুন।

১৩. Counselling করার সময় অবশ্যই রোগীর রোগ সম্পর্কে সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করে কথা বলুন। কখনোই কর্কশ ভাষায় কথা বলবেন না। এমন ভাবে কথা বলবেন যাতে তাদের মনে হয় যে আপনি রোগীর রোগ নিয়ে তাদের মতই সমব্যথী।

১৪. রোগীর লোকদের বচনভঙ্গি এবং অঙ্গভঙ্গির সাথে আপনাকে তাল মিলাতে হবে। অনেক সময় আমরা চোখের ইশারাতেও কথা বলে থাকি।

১৫. রোগীর রোগ সম্পর্কে যদি আশাব্যঞ্জক কোন কিছু থাকে তাহলে অবশ্যই তাদেরকে আশাবাদী হওয়ার জন্য উৎসাহ দিবেন। কিন্তু যদি আশাব্যঞ্জক কিছু না থাকে অবশ্যই তাদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দিবেন না।

১৬. মৃত্যুপথযাত্রী রোগীর ইচ্ছাকে অবশ্যই সম্মান প্রদর্শন করবেন। রোগী মৃত্যুর পূর্বে যদি কোনরকম উইল অথবা আইনগত কোন দিক থাকে তা অবশ্যই রোগীর লোকজন থেকে জেনে নেয়ার চেষ্টা করবেন। অনেক রোগী ইচ্ছা পোষণ করে থাকে যে তাকে যেন life support- এ না দেয়া হয়, অথবা যেন CPR (Cardiopulmonary Resuscitation) না দেয়া হয়, আবার কেউ কেউ থাকে যেন Tracheostomy না করা হয় সে বিষয়েও ইচ্ছা পোষণ করে থাকে মৃত্যুর পূর্বে। সেসকল ইচ্ছাকে সম্মান প্রদর্শনপূর্বক আমাদেরকে সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে এবং তা রোগীর চিকিৎসা report- এ লিখে রাখতে হবে।

১৭. অনেক সময় অনেক রোগী মৃত্যুর পূর্বে অঙ্গ দান করে যায়। সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য রোগীর লোকদের থেকে নিতে হবে এবং রোগীর মৃত্যুর পূর্বে সেইসব প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দিতে হবে যেন রোগীর মৃত্যুর সাথে সাথে তারা এসে অঙ্গ গুলো নিয়ে যায়।

১৮. সহজ সরল সমাপনী হতে হবে Counselling। যাতে কারো মনে কোনো প্রকার দ্বিধা না থাকে।

১৯. রোগীর লোকজনদের জিজ্ঞেস করতে হবে যে তাদের আরো কিছু জানার আছে কিনা। যদি আরও কিছু জানতে চায় তাহলে তাদেরকে প্রশ্ন করতে দিতে হবে এবং তার উত্তর দিতে হবে।

২০. যদি রোগীর লোকজনদের আরো কিছু জানার না থাকে তাহলে তাদেরকে ধন্যবাদ দিয়ে counselling এর সমাপ্তি করতে হবে।

Fig : Benefits of counselling.

ছোট্ট একটি Counselling অনেক সমস্যার সমাধান। রোগী এবং ডাক্তারদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটায় এবং রোগী এবং ডাক্তারদের মধ্যে একটা শান্তিপূর্ণ সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে। চিকিৎসকের প্রতি আস্থা তৈরি করতে সহায়তা করে। রোগী এবং রোগীর লোকজন ও বুঝতে পারে যে তার রোগীর যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে। আমরা আমাদের যথাযোগ্য চেষ্টা এবং সাধ্য অনুযায়ী সর্বাত্মক চেষ্টা করে রোগীর চিকিৎসা করি। কিন্তু এই Counselling এর অভাবে সবকিছু পন্ড হয়ে যায়। তাই আমরা Regular Counselling- এর চর্চা করবো। একসময় দেখা যাবে যে এটা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে।

Dr. Khalid Nur Md Mahbub
ICU Specialist, Rank Major, CMH, Dhaka.
MBBS, DA, FCPS
SSMC- 30
Session : 2001-2002

প্ল্যাটফর্ম একাডেমিক/ ফারিহা হক ঐশী।

Leave a Reply