Blog

The Man Who Can’t Catch AIDS!


সাল ১৯৯৪।
বিজ্ঞানী উইলিয়াম প্যাক্সটন তার গবেষনায় এমন একজন মানুষের সন্ধান পান যিনি কিনা এইচআইভি রেসিস্ট্যান্ট।তাবত দুনিয়া যে রোগীটিকে মরণব্যাধি হিসেবে জানে,লোকটা কিনা সেই এইডসকেই জয় করে বসে আছেন!
লোকটির নাম ছিলো Stephen Crohn।

গবেষকরা এই গোলকধাঁধার উত্তর খুজে পান দুটি শব্দে,সহজাত অনাক্রম্যতা বা Innate Immunity এবং জেনেটিক মিউটেশন!এই দুটো শব্দ ব্যাখ্যা করার চলুন জেনে আসি এইচআইভি ভাইরাস কিভাবে আমাদের দেহের কোষকে আক্রান্ত করে

👉👉এইচআইভি ভাইরাসের বাহিরের আবরণটি হল লিপিড বাইলেয়ার যাতে দু ধরনের প্রোটিন বিদ্যমান; GP120 এবং GP 41।এই GP120 প্রথমে আমাদের শরীরের যেসব কোষে CD4 রিসেপ্টর আছে তার সাথে যুক্ত হয়।(যেমনঃ T lymphocyte,Macrophage ইত্যাদি)যুক্ত হবার পর দ্বিতীয় ধাপে GP120 আরেকটি কো রিসেপ্টরের সাথে যুক্ত হয় যার নাম CCR5।এরপর GP41 প্রোটিন ভাইরাসের লিপিড মেমব্রেনের সাথে আমাদের সেল মেমব্রেন কে যুক্ত করে এবং এভাবেই আমাদের কোষের সাইটোপ্লাজমে এইচআইভি প্রবেশ করে।

স্টিভেন ক্রোন এর ক্ষেত্রে মিউটেশনটা লুকিয়ে ছিলো এখানেই।তার শরীরের CCR5 gene যেটা ৩নং ক্রোমোজোমের খাটো বাহুর ২১ নং পজিশনে অবস্থিত,সেটি ছিলো মিউটেটেড।এই জিনটিই CCR5 রিসেপ্টরটি তৈরীর জন্য দায়ী।বিজ্ঞানীরা এই মিউটেশনের নাম দেন delta-32 mutation।মিউটেশনের কারণে ক্রটিপূর্ণ রিসেপ্টর তৈরী হওয়াতে এইচআইভি ভাইরাস রিসেপ্টরের সাথে যুক্ত হতে বাধা পায় এবং এভাবেই মানুষ এইচআইভি টাইপ-১ ভাইরাসের বিপক্ষে একধরনের জন্মগত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা Innate immunity গড়ে তোলে।

এই গবেষণার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে এইডস আক্রান্ত ব্যাক্তির চিকিৎসায় তৈরী হয় এন্টিভাইরাল ড্রাগ Maraviroc।তাছাড়া ২০০৭ সালে জামার্নীতে একজন এইচআইভি পজিটিভ রোগীর বোন ম্যারো ট্র‍্যান্সপ্ল্যান্ট করা হয় যেখানে দাতার শরীরেও Delta-32 mutation এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়।পরবর্তীতে আক্রান্ত ব্যক্তিও সুস্থ হয়ে ওঠেন।তবে Delta-32 mutation নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী হবার ও কিছু নেই।কারণ পুরো জনসংখ্যার ১% এর কম মানুষের মধ্যে এটি দেখা যায়।তাছাড়া বিজ্ঞানীরা ২০১৯ সালে TNPO3 নামে নতুন একধরনের মিউটেশনের অস্বিত্ব খুজে পেয়েছেন।মূলত এইচআইভি ভাইরাস কোষের সাইটোপ্লাজমে প্রবেশের পর ভাইরাসের নিউক্লিয়ার ম্যাটেরিয়াল এবং এনজাইম গুলো কোষের নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করে।পরবর্তীতে ভাইরাল ডিএনএ Reverse transcriptase এনজাইমের মাধ্যমে ডাবল স্ট্যান্ড ভাইরাল ডিএনএ তৈরী করে এবং Integrase এনজাইমের সহায়তায় কোষের ডিএনএ কে কেটে আমাদের ডিএনএর সাথেই যুক্ত হয়ে যায়।এখানে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে TNPO3 বা Transportin-3।TNPO-3 এর SR-Domain এর সাহায্যে নিউক্লিয়াসে Splicing factor ট্রান্সপোর্ট করে।মিউটেশনের কারণে ত্রুটিপূর্ণ SR-Domain তৈরী হয় যেটা Splicing factor ট্রান্সপোর্ট করতে পারেনা।এর ফলে ডাবল স্ট্র‍্যান্ড ভাইরাল ডিএনএ ও তৈরী হয়না।

এই পুরো গবেষণাতেই Stephen Crohn সহায়তা করেন।হয়ত চিকিৎসা বিজ্ঞানে অবদান রাখাটা তার জিনেই বিদ্যমান!!!!! অনেকের ই হয়ত শুরু থেকেই Crohn নামটা পরিচিত লাগছিলো,,,Crohn’s disease এর জন্য।Stephen Crohn ছিলেন Burrill Bernard Crohn এর ভাগ্নীর ছেলে যার নামে “Crohn’s disease” এর নামকরণ করা হয়।

তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে,যে মানুষটি মরণব্যাধি এইডস কে জয় করেছিলেন তিনিই শেষপর্যন্ত ২০১৩ সালের ১৩আগস্ট আত্মহত্যা করেন।শেষ হয় “ The man who can’t catch AIDS”এর জীবনের গল্প!

মোঃআদিব সিদ্দিকী
হলিফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ
সেশনঃ২০১৭-২০১৮

One thought on “The Man Who Can’t Catch AIDS!

Leave a Reply