Blog

ফেলুদার Wernicke Korsakoff Syndrome রহস্য

দরজায় বেল বাজল। ঘড়ি দেখলাম, সাতটে বেজে পঁচিশ। এ সময় কে এলো আবার? শ্রীনাথ রান্নাঘরে, অগত্যা আমাকেই উঠতে হল। দরজা খুলে দেখলাম এক বছর চল্লিশের প্রৌঢ় দাঁড়িয়ে, চোখে রিমলেস চশমা, চুল পাট করে একপাশে করে রাখা। কপালে ভাঁজ।
‘নমস্কার, প্রদোষবাবু আছেন?’
‘হ্যাঁ আছেন, আসুন। বসুন’
ফেলুদার ঘরে গিয়ে দেখলাম ফেলুদা এখনো যোগব্যায়ামে ব্যস্ত, প্রতিদিন সকালেই সে আধাঘন্টা যোগব্যায়াম করে। ফেলুদা বলে, এতে নাকি শরীর, মন দুটি ই সারাদিনের জন্য চাঙ্গা থাকে, চিন্তার জট খুলে যায়।
বাইরের ঘরে এসে বললাম, অপেক্ষা করতে হবে, একটু বসুন।

ফেলুদা পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে তার উপর শাল জড়িয়ে বেরিয়ে এল। শ্রীনাথ কে চায়ের কথা বলে সোফায় এসে বসল।
‘নমস্কার, আমি ই প্রদোষ চন্দ্র মিত্র’
‘নমস্কার, আমি ভীমশংকর লাহা, থানার বড়বাবুর সাথে পরিচয় আছে, যেকোন পারিবারিক, বৈষয়িক বা অন্য সমস্যায় আমি তার শরণাপন্ন হই। উনার কাছে এই ঘটনাটি প্রকাশ করায় উনি আপনার নাম এবং পরিচয় দিয়ে আপনার কাছে আসতে বললেন।’
‘বলুন, কি সমস্যা নিয়ে এসেছেন’
‘সমস্যা টা একটু গভীর। কিভাবে যে শুরু করব বুঝতে পারছি না’
‘একদম শুরু থেকেই শুরু করুন’
ফেলুদা চারমিনার এর প্যাকেট এগিয়ে দিল, ভদ্রলোক কিন্তু কিন্তু করে একটি সিগারেট নিলেন।
‘আপনি সম্ভবত ঘটনা টা নিয়ে খুব বিচলিত হয়ে আছেন’
‘হ্যাঁ তা তো আছি ই। কিভাবে বুঝলেন?’
‘সকালে শেভ করেছেন, কিন্তু কানের পাশে সাবানের কিছু অংশ লেগে রয়েছে, অর্থাৎ তাড়াহুড়ো করে এসেছেন, সিগারেট ধরানোর সময় লাইটার চারবার জ্বালানোর চেষ্টা করলেন, দুবার জোরে ঝাঁকি দিলেন, বাম হাতের অনামিকায় আংটি পড়েন, আজ তাড়াহুড়োয় পড়তে ভুলে গেছেন’
‘ধন্যি মশাই, আমার সমস্যার সমাধান আপনি ই করতে পারবেন। আর কেউ না।’
শ্রীনাথ চা নিয়ে এলো, ফেলুদা ভদ্রলোক এর দিকে এক কাপ তুলে দিয়ে নিজে এক কাপ নিল, বলুন, আপনার সমস্যার কথা।
‘সমস্যা টা মূলত আমার বাবার। বাবার নাম শ্রীজয়শংকর লাহা, বাবা টি এস্টেট এর মালিক ছিলেন, এখন রিটায়ার্ড, পৈত্রিক সূত্রে প্রচুর টাকাপয়সা ছিল বাবার। আমার ঠাকুরদা ছিলেন জমিদার। সে হিসেবে তিনি বাবার জন্য প্রচুর ধন সম্পদ রেখে যান। উঠতি বয়সে বাবার বিভিন্ন ধরনের খারাপ সঙ্গ ছিল, জুয়া খেলার নেশা ছিল, রোজ জুয়ার আড্ডায় যেতেন, গভীর রাতে মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরতেন। পরে ঠাকুরদা ই টি এস্টেট কিনে দিয়েছিলেন বাবা কে, যাতে অন্তত খারাপ সঙ্গ গুলো দূর করা যায়। টি এস্টেট এর ব্যবসায় এসে বাবার জুয়ার নেশা চলে গিয়েছিল, কিন্তু মদের নেশা টা রয়েই গিয়েছে। যদিও আগের মত মাতাল হয়ে ঘরে ফিরতেন না, তবুও সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন বেশ ভালো পরিমাণ মদ্যপান করতেন। এমন ও হত, সেই দুই একদিনে প্রায় পঁয়ত্রিশ পেগ মদ খেয়েছেন। এমন কি রিটায়ারমেন্টের পরেও মদের স্বভাব টা থেকেই যায়। প্রথমে প্রথমে মা নিষেধ করতেন, কিন্তু তাতে লাভ হত না। বাবা কারো নিষেধ শুনতেন না। যদিও গত দুই মাস তিনি এক ফোঁটাও খান নি, কিন্তু ইদানীং কিছু সমস্যা দেখা গিয়েছে। বাবা প্রায় ই ভুলে যান, কোথায় আছেন, এমন কি আমাদের ও চিনতে পারেন না। কথাবার্তা বলেন যার কোন অর্থ নেই। একদিন দেখলাম, ঘুম থেকে উঠে জামাকাপড় পড়ে তৈরি হচ্ছেন। জিজ্ঞাসা করলাম, বললেন অফিসে যাচ্ছেন। কিছুদিন আগেই তিনি রিটায়ারমেন্টে গিয়েছেন এ কথা বেমালুম ভুলে বসে আছেন। আরেকদিনের ঘটনা বলি, আমার স্ত্রী চা নিয়ে বাবার ঘরে গিয়েছিল, বাবা চিৎকার করে উঠলেন। আমরা সবাই দৌড়ে বাবার ঘরে গেলাম, দেখলাম, বাবা বিছানার এক কোণে জবুথবু হয়ে বসে আছেন, আর অনবরত বলছেন,ওকে নিয়ে যাও, ও চায়ে বিষ মিশিয়ে এনেছে, আমাকে মেরে ফেলবে। প্রায়দিন ই আমাদের চাকর কে দেখলে বলে উঠেন, চাকর নাকি খাবারে বিষ মিশিয়ে দিচ্ছে, মেরে ফেলবে সবাইকে। আর শুধু বলতে থাকেন উনার পায়ে যেন আগুন ধরে গিয়েছে। ব্যথায় কাঁতরাতে থাকেন। এসব ব্যবহারের জন্য বাবার কাছে এখন কেউ যেতেও ভয় পায়। আপনি আমার বাবাকে বাঁচান প্রদোষ বাবু, আপনি যত টাকা চান আমি দিতে রাজি আছি।’
‘আপনার বাবা কি বাসায় ই আছেন এখন?’
‘হ্যাঁ, বাবা কে এখন বাবার ঘরে তালাবন্ধ করে রাখতে হয়, কারণ গত পরশু রাতে হঠাৎ বাসা থেকে বেরিয়ে যান। কিন্তু খুব সম্ভবত বাবার পায়ের জ্বলুনির কারণে বেশিদূর যেতে পারেন নি, কিছুদূর গিয়ে পড়ে যান। সকালে পাড়ার ছেলেরা দেখতে পেয়ে বাসায় নিয়ে আসে।’
‘আপনার সম্পূর্ণ ঘটনাটি শুনলাম। আমার একবার আপনাদের বাসায় গিয়ে আপনার বাবা কে দেখতে হবে’
‘তাহলে এখন ই চলুন না, আমার গাড়িও আছে’
‘না, এখন নয়। আমি বিকাল ৪টায় যাব আপনাদের বাড়িতে। বাড়ির সকলকে একইসাথে থাকতে বলবেন, আমি বুঝতে পেরেছি, সমস্যা টা কোথায়’
‘কি হয়েছে আমার বাবার? বাবা বেঁচে থাকবে তো?’
‘বিকেলেই জানতে পারবেন। আপনার ঠিকানা টি রেখে যান।’
‘চলি, নমস্কার’
‘নমস্কার’

ভদ্রলোক যাওয়ার পরে ফেলুদা টেলিফোনে ডায়াল করলেন লালমোহনবাবু কে। বিকালে ৩ টার সময় যেন উনার সবুজ এম্বাসেডর নিয়ে হাজির হন ২১,রজনীসেনরোড, কলকাতা-৭০০০২৯ এর বাড়িতে। লালমোহন বাবুর ভাষ্যমতে হাইলি সাসপিশাস একটি কেস দেখতে নিয়ে যাবে ফেলুদা।

জিজ্ঞাসা করলাম, ফেলুদা তুমি কি বুঝতে পেরে গেছ? ফেলুদা বলল, তোর ও তো বুঝে যাওয়া উচিত ছিল। আমার দৃষ্টির শূণ্যতা দেখে ফেলুদা বলল, কয়েকটা ক্লু দিচ্ছি, Old age, Chronic alcoholism, Agitation, Confusion, Burning sensation in the lower limb। বুঝলি? না সূচক মাথা নাড়লাম। মাথা নাড়ানো দেখে ফেলুদা বলল, মাথা খাটা, আমি ঘরে গেলাম।

এই কথা বলে ফেলুদা নিজের ঘরে চলে গেল। আমি জানি, সে এখন তার নীল খাতার পাতায় মুখ গুঁজে থাকবে। এখন বোমা মারলেও তার মুখ থেকে কোন কথা বের হবেনা।

ঠিক তিন টার সময় লালমোহনবাবু চলে এলেন, এর মাঝে ফেলুদা একবারের জন্য ও নিজের ঘর থেকে বের হয়নি। সাধারণত সকাল থেকে তিন কাপ চা খায় সে, আজ এক কাপ ও খায়নি।

‘কি ব্যাপার হে ভায়া তপেশ, তোমার দাদা হঠাৎ এরকম জরুরি তলব জানাল, তাও আবার নাকি হাইলি সাসপিশাস কেস, আমরা কি ড্যাকয়েটস দের ধাওয়া করব?’
‘এই যে লালমোহন বাবু, এসে গিয়েছেন, চলুন বেরিয়ে পড়া যাক।’ ফেলুদা তার ঘর থেকে বেরিয়ে বলল।

পুরো রাস্তা ফেলুদা মুখে তালা মেরে রাখল। আমি আর লালমোহন বাবু বার দুয়েক একে অপরেরu দিকে চাওয়া চাওয়ি করলাম। লালমোহন বাবু একবার কিছু জিজ্ঞাসা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ফেলুদা এমনভাবে নিজের হাত তুলে দেখাল, আমরা স্পিক-টি-নট হয়ে গেলুম।

ভীমশংকর বাবুর বাড়িটি প্রায় প্রাসাদের মতই। সাধারণত সিনেমায় রাজা রাজড়াদের এরকম বাড়ি দেখা যায়। লালমোহন বাবুর গাড়ি গেট এ হর্ণ দিতেই উর্দিপরা দারোয়ান গেট খুলে দিল। গেট দিয়ে ঢোকার সময় দেখলাম পাথরের ফলকে নাম লেখা ‘উদয়শংকর লাহা’। নিশ্চয় ভীমশংকর বাবুর ঠাকুরদা হবেন।

গাড়ি থেকে নামতেই ভীমশংকর বাবু এগিয়ে এসে অভ্যর্থনা জানালেন। উনার পিছু পিছু আমরা বৈঠকখানায় এলাম। লালমোহন বাবু আমার কনুই এ খোঁচা মেরে বললেন, যত বড় রাজপ্রাসাদ, এখানে মেরে পুঁতে রাখলে তো কেউ টের ও পাবে না।

বৈঠকখানায় এসে সোফায় বসে ফেলুদা বলল, বাড়ির ছোট রা কেউ থাকলে তাদের আসার দরকার নেই, বাকিদের আসতে বলুন। সবাই আশেপাশেই ছিলেন হয়ত, ফেলুদার কথা শুনে ভিতর বাড়ির দুটি পর্দা সরিয়ে একদিক থেকে বছর পঁয়ত্রিশ এর এক রমণী, এবং অন্যদিক থেকে বছর ষাট এর এক বৃদ্ধা এগিয়ে এলেন। ভীমশংকর বাবুর স্ত্রীর পিছু পিছু একজন চাকর পেল্লাই এক ট্রে তে করে ৫ রকমের মিষ্টি, দই, শরবত নিয়ে এল।

সবার দিকে একবার দৃষ্টিপাত করে ফেলুদা বলল, নমস্কার, আমি প্রদোষ চন্দ্র মিত্র, এ আমার খুড়তুতো ভাই তপেশ রঞ্জন মিত্র, আর ইনি আমার বন্ধু লালমোহন গাঙ্গুলী। আজ সকালে ভীমশংকর বাবু আমার বাড়িতে গিয়েছিলেন, জয়শংকর বাবুর অবস্থার বিবরণ দিলেন। আমি একটু জয়শংকর বাবুর সাথে দেখা করতে চাই।
আমাদের কে বসতে বলে ফেলুদা ভীমশংকর বাবুর পিছু পিছু ভিতর বাড়িতে চলে গেল। খুব ইচ্ছা করছিল, আমিও যাই ফেলুদার সাথে। কিন্তু ফেলুদার যখন প্রয়োজন, নিজেই আমাকে ডাকবে।

মিনিট পাঁচেক পরে ফেলুদা ফিরে এল। তার চোখে মুখে হাসির ঝলক দেখতে পেলাম। যার অর্থ সে কেস টাকে গুছিয়ে নিয়েছে।

ফেলুদা বলা শুরু করল, ‘ভীমশংকর বাবুর কাছে শুনে আমি মোটামুটি ধারণা করে ফেলেছিলাম, কিন্তু তবুও নিশ্চিত হওয়ার জন্য কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন ছিল। আমি আমার মতামত আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
জয়শংকর বাবু প্রচুর মদ্যপান করতেন, অনেক দিন ধরেই তার মদ্যপানের স্বভাব ছিল। অর্থাৎ Chronic alcoholism এর ফলে উনার শরীরে Thiamine এর অভাব দেখা দেয়। যেটা Chronic alcoholism এর একটা প্রধান symptom। ইদানীং উনি উত্তেজিত থাকতেন অর্থাৎ mental agitation, মনে হত কেউ তাকে মেরে ফেলতে চায়, অর্থাৎ Delution of persecution, কাউকে চিনতে পারেন না অর্থাৎ amnesia এবং একই সাথে উনার পায়ে জ্বলুনি হতে থাকে অর্থাৎ burning pain in lower limb। এসব থেকে আমার মাথায় একটা চিন্তা আসে। এখানে এসে আমি উনার উপরে কিছু পরীক্ষা করি। দেখা যায়, উনার পায়ের পেশী দুর্বল, দুই পায়েই একই রকমের ঝিনঝিন অনুভূতি রয়েছে এবং Deep tendon reflex দেখে Knee jerk ও ankle jerk absent পাই।
সবকিছু মিলিয়ে আমি যা বুঝতে পেরেছি, জয়শংকর বাবু Wernicke Korsakoff Syndrome এ আক্রান্ত।

সাথে উনার জিহ্বা টাও Red beefy tongue। যেটা Thiamine deficiency এর একটা সাইন।’
‘এ থেকে পরিত্রাণের কোন উপায় নেই?’
‘আছে, Thiamine replacement therapy, তবে দক্ষ চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধের ডোজ এডজাস্ট করতে হবে। যদিও এতে উনি পরিপূর্ণ সুস্থ হবেন না। উনার Confusion টা যেতে অনেক সময় লাগতে পারে। তবে যেহেতু পায়ের সমস্যা, অর্থাৎ উনার Gait Disturbance দেখা দিয়েছে, সেক্ষেত্রে মনে হয় অতিরিক্ত মদ্যপান উনার brain এর irreversible damage করে ফেলেছে। এক্ষেত্রে সুস্থ হওয়ার নিশ্চয়তা অনেক টা কমে আসে। তবে এক্ষেত্রে আপনাদের সবার ই উনাকে সাহায্য করতে হবে। চেষ্টা করবেন, কোনভাবেই যেন উনি আর মদ ছুঁতে না পারেন। একইসাথে উনাকে balanced diet খেতে হবে। সাথে একজন ফিজিওথেরাপিস্ট এর ও পরামর্শ লাগবে, যিনি উনাকে হাটাচলার ব্যায়াম শিখিয়ে দিবেন। আজ চলি। চল তোপসে’
‘প্রদোষ বাবু, আপনার পারিশ্রমিক টা?’
‘আমি আজ পারিশ্রমিক নেব না। খেয়াল রাখবেন বাবার প্রতি। চলি। নমস্কার’

বেরিয়ে এসে ফেলুদা কে জিজ্ঞাসা করলাম, ফেলুদা তুমি শুনেই বুঝে গিয়েছিলে যে এটা Wernicke Korsakoff Syndrome? এখানে কি হচ্ছে?
‘দেখ, যেহেতু উনার Chronic alcoholism এর history আছে, অনেকদিন ধরে যারা মদপান করেন, তাদের Thiamine deficiency হয়। Thiamine কি কাজে লাগে? মূলত তিন ধরনের কাজ করে।
*Glucose-6-Phosphate কে Pentose Phosphate pathway এর মাধ্যমে myelin sheath এর দৃঢ়তা রক্ষা করে।
*Pyruvate কে Acetyl Co-A তে পরিণত করে।
*Alpha keto glutarate কে succinate এ পরিণত করে। যখন Thiamine কমে যায়, myelin sheath এ গ্লুকোজ মেটাবলিজম কমে যায়, ফলে myelin sheath সংকুচিত হতে থাকে। Pyruvate থেকে Lactate জমা হয়, আবার glutamate জমা হয়ে free radical তৈরি করে, এবং মস্তিষ্কে বিষক্রিয়া করতে থাকে, যার ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলো আস্তে আস্তে মারা যেতে থাকে। ফলে মস্তিষ্কের থ্যালামাস, হাইপোথ্যালামাস, ম্যামিলারি বডি ছোট হয়ে যেতে থাকে।


এখন,রোগের লক্ষণ গুলো তো দেখলি ই, কিভাবে বুঝবি? যদি কেউ সম্পূর্ণ মদ্যপান ছাড়ার ষাট দিন পরে এ ধরনের লক্ষণ দেখা গেলে, তার টা নিশ্চিতভাবেই Wernicke Korsakoff Syndrome।
ক্লিনিক্যাল এর পাশাপাশি কিছু পরীক্ষা ও করতে হয়, যেমনঃ
একটা CBC করতে হয়, কোন ধরনের acute infection আছে কিনা, বা রক্তকণিকা সব ঠিক আছে কিনা দেখতে,
Serum electrolyte দেখতে হয়, কোন ইলেক্ট্রোলাইট এর অসামঞ্জস্যতার কারণে এ ধরনের Confusion হচ্ছে কিনা দেখতে,
Serum Magnesium দেখতে হয় যা কিনা Thiamine যে কম তা বুঝতে সাহায্য করে,
সাথে একটা contrast brain MRI করে নিশ্চিত হওয়া যায়।
যত দ্রুত নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসা শুরু করা যায়, তত এর ফলাফল ভাল। দেরি হলে ফলাফল ভাল হয় না। চিকিৎসার ক্ষেত্রে Thiamine দিতে হয়। প্রথমে শিরায় বা পেশীর মাধ্যমে ১০০ মিলিগ্রাম ৩-৭ দিন পর্যন্ত দিতে হতে পারে। এরপরে Thiamine ট্যাবলেট খেতে হয়, যতদিন না Alcohol withdraw করা হয়। যেহেতু জয়শংকর বাবু অনেকদিন কোন চিকিৎসা পাননি, সেক্ষেত্রে উনার জন্য হাই ডোজ লাগবে। প্রথমে শুরু করতে হবে ৫০০ মিলিগ্রাম, দিনে তিনবেলা এভাবে একমাস চিকিৎসা করতে হবে। একমাস পরে দিনে ১০০ মিলিগ্রাম করে শিরাপথে দিতে হবে। যখন ই লক্ষণ গুলো নিয়ন্ত্রণ এ চলে আসবে, সেক্ষেত্রে মুখে ঔষধ খেতে পারবে।
চলুন, লালমোহনবাবু, সকাল থেকে কিছু খাওয়া হয়নি, এরকম একটা কেস এর পর জম্পেশ না খেলে চলছে না’
‘বলিহারী মশাই, কি খেল দেখালেন, ভাবছি আমার ৫৪ নাম্বার উপন্যাস টা আপনাকেই ডেডিকেট করব। থ্রি চিয়ার্স ফর থ্রি মাস্কেটিয়ার্স, হিপ হিপ হুররে’

ধ্রুব ধর
চট্টগ্রাম মা-ও-শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ
সেশনঃ২০১৩-২০১৪

Leave a Reply