Blog

জামিল ভাইয়ার Opium বৃত্তান্ত

আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন, ইদানিং একজন ব্যক্তি প্রায়ই বিভিন্ন গানের বেশ চমৎকার কিছু কভার করে নিয়মিত ফেসবুকে আপলোড দিচ্ছেন এবং সবাইকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন। তার অসংখ্য ভক্ত,অনুরাগী বারবার ‘1K’ কমেন্ট করার অফার দিচ্ছে। বিনিময়ে তাদের দাবি খুবই সামান্য। চকোলেট ও সালামি চায়। তবে, সেই গুণী ব্যক্তি ছলে বলে কৌশলে বিষয়টি বারবার এড়িয়ে যাচ্ছেন। আর সেই স্বনামধন্য কৃপণ ব্যক্তিটি হচ্ছেন আমার ভাই। জামিল ভাইয়া। আমাদের মধ্যে সারাক্ষণ খুঁনসুটি লেগেই থাকে। আমিও আজ পর্যন্ত ওর পকেট থেকে এক টাকাও আদায় করতে পারিনি। তবে কোনদিন হাল ছাড়িনি। গতকাল ও এমনই এক ঘটনা ঘটে।

সন্ধ্যের সময় অধিকার আদায় করার উদ্দেশ্য নিয়ে ভাইয়ার রুমে হুট করেই ঢুকে পড়ি। ঢুকতেই শুনি, ভাইয়া বেশ ভরাট গলায় গান ধরেছেন-
” আফিম খেলে মাথা ধরে,
কোকেনে বুক ধরফররর……..”
আমাকে দেখে কিছুটা চমকে গিয়ে অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো।
আমি: কী ব্যাপার ভাইয়া? থামলে কেন? ভালোই তো গাইছিলে। আমিও একটু শুনি, তোমার আফিমের সাথে আর কী কী খেতে ইচ্ছে করে।

জামিল: এই তুই এখানে কী করিস? তোকে না বলেছি আমার রুমে নক না করে ঢুকবি না। বের হয়ে যা!

আমি: ওমা! আমার উপর রাগ করছো কেন? তুমিই তো বললে আফিম খেলে মাথা ধরে। আব্বু আম্মুকে কী ডাকবো? মাথা ব্যথার ঔষুধ লাগবে?

জামিল: ভালো হবে না কিন্তু!

আমি: আচ্ছা সরি। মজা করছিলাম তো। রাগ করছো কেন ভাইয়া? গানটা তো ভালোই গাইছিলে।

জামিল: তুুই আমাকে খুব জালাচ্ছিস। আচ্ছা বোস। বাই দা ওয়ে, এতো যে আফিম আফিম করলি, তুই তো থার্ড ইয়ারে পড়িস। তোকে একটু পরীক্ষা করে দেখি, আদৌ পড়াশোনা কিছু করিস কিনা।
আফিমের আরেক নাম কী বল তো?

আমি: Opium. উফফ! ভাইয়া, এটা কে না জানে?

জামিল: সোজা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করলাম। আগে আগে দেখো, হোতা হ্যা কেয়া!
তুই কী বলতে পারবি এই opium কীভাবে সংগ্রহ / তৈরি করা হয়?

আমি: হ্যাঁ। বলছি। Papaver somniferum নামক এক উদ্ভিদ থেকে opium সংগ্রহ করা হয়। এক একটি গাছে ৫-৮ টি ক্যাপসুল থাকে। কাঁচা ক্যাপসুল গুলো তে longitudinal incision দিয়ে, overnight রেখে দেয়া হয়। পরদিন সকালে দেখা যায় incision দেয়া জায়গা গুলো দিয়ে এক ধরনের white, milky exudate বের হয়ে এসেছে। এই exudate সংগ্রহ করে রোদে শুকালেই তৈরি হয়ে যায় opium।

Fig : Papaver somniferum.

জামিল: বাহ্ বাহ্। ভালো বলেছিস। এই যে Papaver somniferum এর কথা বললি, তুই কি জানিস এই গাছের seed গুলো একটি বিশেষ কাজে ব্যবহৃত হয়? বলতে পারবি?

আমি কিন্তু উত্তরটা জানি। তবুও আমাকে বলার সুযোগ না দিয়েই নিজেই বলতে আরম্ভ করলো।

জামিল: এসব তো তুই জানবি না। পারিস তো খালি গরু-গাধার মতো মুখস্থ করতে। শোন।
Seed গুলোকে poppy seed বলা হয়। আমরা যেটাকে রান্নায় পোস্ত হিসেবে ব্যবহার করি, সেটাই হলো এই poppy seed।

Fig : Poppy seeds.

আমি: আমি এটা জানতাম তো! তুমি বলার সুযোগ দিলে না। নিজেকে তো সবজান্তা দাবি করো।
বলো দেখি, opium কতো প্রকার ও কী কী? উদাহরণ সহ বলবে।

জামিল: আমি কখনই নিজেকে সবজান্তা দাবি করি না। তবে এটা ঠিক, সব ক্ষেত্রেই আমি তোর থেকে ঢের এগিয়ে৷ তোর মাথায় গোবর ছাড়া আর কিছু আছে নাকি!
Opium কে তিন ভাগে ভাগ করা যায় –

  1. Natural: morphine, codeine
  2. Semi-synthetic: heroine, hydromorphone
  3. Synthetic: methadone, meperidine

এবার তুই আমাকে বল। Opium কী ধরনের ড্রাগ এবং কীভাবে কাজ করে?

আমি: এএ্এ্…. মমম… Opium is a somni..somni…

জামিল: Somniferum. অর্থাৎ sleep inducing agent।

আমি: হ্যাঁ হ্যাঁ! মনে পড়েছে। It acts by depressing all the centres except –
▪︎ Occulomotor
▪︎ Vomiting and
▪︎ Sweating
Opium also acts as an analgesic.

জামিল: ধরে নে তুই ডাক্তার হয়ে গিয়েছিস। যদিও হতে পারবি কিনা আমার সন্দেহ আছে। তাও ধরে নে৷ Opium poisoning এর পেশেন্ট আসলে তুই বুঝবি কী করে? Sign-symptom কয়েকটা বলতে পারবি?

আমি: বলছি শোনো।
যদি opium poisoning ingestion এর মাধ্যমে হয়, সেক্ষত্রে sign-symptom দেখা দিতে আধ ঘন্টা মতো সময় লাগবে। আর যদি poisoning injection এর মাধ্যমে হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ৩-৪ মিনিট মধ্যেই sign-symptom দেখা দিবে। উপসর্গ গুলোকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায় –
১. Stage of excitement :
▪︎ Increased sense of well-being
▪︎ Increased mental activity
▪︎ Freedom from anxiety
▪︎ Talkativeness
▪︎ Restlessness

২. Stage of stupor :
▪︎ Headache, nausea, vomiting
▪︎ Giddiness
▪︎ Drowsiness
▪︎ Constricted pupils
▪︎ Face and lips cyanosed

৩. Stage of coma :
▪︎ Patient will pass into deep coma.
▪︎ Muscles will become flaccid.
▪︎ All reflexes will be abolished.
▪︎ All secretions will be suspended except sweat.

জামিল: Breathing টা কেমন হবে বললি না তো।

আমি: Cheyne-Stokes breathing.

Fig : Cheyne Strokes Breathing.

জামিল: গুড। এবার বল opium antidote কী?

আমি: Naloxone

জামিল: হুম। ট্রিটমেন্ট কী ভাবে করবি?

আমি: 1:5000 solution of potassium permanganate দিয়ে gastric lavage করতে হবে। দিনে দুবার করে enema করতে হবে। যদি breathing difficulties থাকে, তাহলে, endotracheal intubation করতে হবে।

জামিল: এত কিছু বললি, কিন্তু কতোটুকু opium খেলে poisoning হবে, সেটাই তো উল্লেখ করলি না।

আমি: তুমি তো জিজ্ঞাসা করো নাই। Opium এর fatal dose হচ্ছে ২ গ্রাম।

ভাইয়া আবার একটা খুঁত ধরার জন্য মুখ খুলতে যাচ্ছিল। তবে এবার আর আমি সুযোগ দিলাম না।

আমি: এতো প্রশ্ন করলে, মেইন জিনিসটাই তো জানতে চাইলে না। Post-mortem appearance.
মন দিয়ে শোনো।
Signs of asphyxia will be found (congestion, cyanosis, petechial haemorrhage, oedema)
Stomach ওপেন করলে lumps of opium পাওয়া যাবে৷

এভাবেই বেশ অনেকটা সময় পার হয়ে গেল। বেশ রাত হয়ে গেছে। আমরা টেরই পাইনি। এমন সময় কে জানি ভাইয়াকে ফোন করলো। খুব নরম সুরেলা গলায় হ্যালো বলতে বলতে ছাঁদে চলে গেলো।
চকোলেট আর সালামির অধিকার থেকে আজ আমি আবার বঞ্চিত হলাম।

Reference :
Dr. K.S.Narayan Reddy & Dr. O.P.Murty, The Essentials of Forensic Medicine and Toxicology, 34th Edition, Jaypee,2017

Platform academia / Fahima Hasan
MH Samorita Medical College
Session: 2017-18

Leave a Reply